🌱 সন্তানের অন্তরে তাকওয়ার বীজ বুনুন
আমরা, বাবা-মায়েরা, একান্তভাবেই চাই আমাদের সন্তানরা নিরাপদ থাকুক—সৎ পথে চলুক। আমরা চাই তারা সঠিক পথে হাঁটুক, ভুলের অন্ধকারে না ডুবে যাক।
তাইতো অনেক বাবা-মা সন্তানকে ভালো পথে রাখতে গিয়ে কিংবা ভুল কাজ থেকে বিরত রাখতে বলেন:
🔸 “আমি কিন্তু দেখছি কী করছিস!”
🔸 “আমার চোখের আড়ালেও আমি সব জানি!”
🔸 “যদি এমন করিস, তাহলে শাস্তি পাবি!”
এই কথাগুলোতে শিশুর মনে ভয় তৈরি হয় মানুষকে ঘিরে, বিশেষ করে মা-বাবাকে ঘিরে। ফলে যখন মা-বাবা সামনে থাকেন না, তখন তারা অনেক সময় ভুল/খারাপ কাজ করে ফেলে, কারণ তারা ভাবে বাবা/মা তো আর দেখছেন না! তবে তারা একথা বেমালুম ভুলে যায়, কেউ না দেখলেও আল্লাহ সুবহানাহু ওয়াতাআ'লা তো দেখছেন!
কিন্তু আমরা কি এটা চাই?
নিশ্চয়ই না। আমরা চাই সন্তান এমন চিন্তা করুক:
🔸“যদি কেউ না দেখে, তবুও আমার আল্লাহ দেখেন!”
🔸 “আমার রব সব দেখেন, সব জানেন।”
🔸 “আমার রব, আল্লাহ, সর্বজ্ঞ, সর্বদ্রষ্টা।”
🔸 “তিনি সর্বশক্তিমান, আমার প্রতিটি কাজ তাঁর দৃষ্টিতে ধরা পড়ে।”
🌿 তাকওয়া কীভাবে শেখাবো?
আল্লাহ তা'আলা বলেন: “…আর আল্লাহ সর্ববিষয়ের সম্যক দ্রষ্টা।” (সূরা আল-বুরূজ ৮৫:৯)
তাকওয়া মানে—আল্লাহর ভয় ও ভালোবাসা থেকে নিজেকে সৎ রাখা। এটি কোনো বাহ্যিক শাসনের ভয় নয়, বরং অন্তরের গভীর বিশ্বাসের ফল। তাই, "আল্লাহ আমাদের সবচেয়ে বড় অভিভাবক"—এই অনুভূতি শিশুদের হৃদয়ে ছোটবেলা থেকেই গেঁথে দিতে হবে। এটিই হল তাকওয়া (আল্লাহভীতি) এর শিক্ষা।
✅ সন্তানকে বোঝাতে হবে—
“আমার কলিজা/সোনা, তুমি যখন একা থাকো, সেটা হোক সমুদ্রের গভীর অতলে কিংবা পাহাড়ের সর্বোচ্চ চূড়ায়।
সেই একাকীত্বেও তোমার সঙ্গে আছেন আল-বাসীর, যিনি সব দেখেন।” তুমি যদি ভালো কাজ করো, তিনি খুশি হোন। মন্দ কাজ করলে তিনি অসন্তোষ হোন।
মনে রাখবে, “মানুষের চোখ এড়িয়ে যাওয়া যায়, কিন্তু আল্লাহর দৃষ্টির বাইরে যাওয়া যায় না —তাই তাঁর জন্যই সৎ থাকবে।”
🕌 এই কথাগুলোর ফল কী হবে জানেন?
✅ সন্তান বুঝবে, সত্যিকারের জবাবদিহি আল্লাহ তা'আলার সামনে।
✅ তারা ভেতর থেকে সৎ ও চরিত্রবান হয়ে উঠবে।
✅ মা-বাবা সামনে না থাকলেও আল্লাহ তা'আলার ভয় তাদের অন্যায় থেকে দূরে রাখবে।
✅ শিশুর মনে তাওহীদের ভিত্তি তৈরি হবে।
✨ সবশেষে বলব,
আমরা সন্তানদের যদি শুধুই নিজেদের ভয় দেখিয়ে ভালো রাখতে চাই, তাহলে তারা শুধু “লুকিয়ে” হলেও খারাপ কাজ করবে। কিন্তু যদি তাদের হৃদয়ে আল্লাহ তা'আলার ভয়, আল্লাহ তা'আলার ভালোবাসা গেঁথে যায়, তাহলে তারা সবার চোখের আড়ালেও সৎ থাকবে ইন শা আল্লাহ।
মনে রাখবেন, তাওহীদ কেবল মুখে বলে বা পড়িয়ে নয়, শিশুদের অনুভবে গভীরভাবে বসিয়ে দিতে হয়।
আসুন, তাকওয়াভিত্তিক প্রজন্ম গড়ি, যারা আল্লাহ তা'আলাকে ভয় করে, ভালোবাসে এবং তাঁর জন্যই সঠিক পথে চলবে।