ব্যর্থতা থেকে সফলতার পথে (অকৃতকার্য শিক্ষার্থী)
সমাজ/রাষ্ট্র সব সময় সফল শিক্ষার্থীদের পিছনেই ঘুরে। তাদের নিয়ে আলোচনা হয়, তাদের প্রশংসা হয়, বিভিন্নভাবে পুরস্কৃত করা হয়।
কিন্তু ব্যর্থ বা অকৃতকার্য শিক্ষার্থীদের কথা কয়জনেই বা স্মরণ রাখে। হয়তোবা তারা কোনো ভুলের কারণেই ব্যর্থ হয়েছে। পৃথিবীর অনেক সফল মানুষ ব্যর্থতা থেকে সফলতার সিঁড়ি গুনতে শুরু করেছে।
২০২৩ সালে ৫১৩ জন শিক্ষার্থী আত্মহত্যা করেছে বলে রিপোর্ট করেছে আছোল ফাউন্ডেশন। এর মধ্যে প্রায় ৪.৫% শিক্ষার্থী পরীক্ষায় অকৃতকার্য হওয়ার কারণে আত্মহত্যা করেছে, এবং ১.৮% শিক্ষার্থী তাদের প্রত্যাশিত ফলাফল না পাওয়ার কারণে জীবন হারিয়েছে। এসব শিক্ষার্থীর মানসিক চাপ ও আত্মবিশ্বাসে ঘাটতি মূল কারণ হিসেবে চিহ্নিত হয়েছে। (The Daily Star)
আমাদের প্রাণপ্রিয় অকৃতকার্য শিক্ষার্থীদের পাশে দাঁড়াতে হবে। তাদের বুঝাতে হবে, অকৃতকার্য হওয়া মানেই জীবনের শেষ নয়। এটি কেবল নতুনভাবে শুরু করার একটি সুযোগ। ব্যর্থতা হতে পারে তোমার সাফল্যের পথে একটি ধাপ। তোমার দুর্বলতাগুলো শনাক্ত করে সেগুলো কাটিয়ে ওঠার জন্য কাজ শুরু করতে হবে। ব্যর্থতা থেকে শিক্ষা নিয়ে এগিয়ে যেতে হবে, কারণ এটি তাদের আরও শক্তিশালী করে তুলবে ইন শা আল্লাহ ।
তাই আমি পরিকল্পনা করছি, অকৃতকার্য শিক্ষার্থীদের জন্য সেমিনারের আয়োজন করতে। সেখানে সেসব বিষয় নিয়ে আলোচনা থাকবে:
১. তাওয়াক্কুল: জীবনের এই ফলাফলের উপর জীবন থেমে থাকবে না। আমাদের চূড়ান্ত ফলাফল আখিরাতে। তাই জীবনের এই যুদ্ধে আল্লাহর উপর তাওয়াক্কুল করে আবারো ঝাঁপিয়ে পড়তে হবে নতুনভাবে।
২. অকৃতকার্যতার ইতিবাচক দিক: কীভাবে ব্যর্থতা শিক্ষার্থীদের জীবনে নতুন সুযোগ ও সম্ভাবনা তৈরি করতে পারে।
৩. আত্মবিশ্বাস পুনর্গঠন: ব্যর্থতার পরেও কীভাবে নিজের ওপর আস্থা রাখা যায় এবং আত্মবিশ্বাস ফিরে পাওয়া যায়।
৪. ব্যর্থতা থেকে শিক্ষা নেওয়া: কীভাবে ভুল থেকে শিক্ষা নিয়ে ভবিষ্যতে সফল হওয়া যায়।
৫. সফলদের ব্যর্থতার গল্প: জীবনে সফল ব্যক্তিদের ব্যর্থতার অভিজ্ঞতা ও তাদের থেকে প্রাপ্ত শিক্ষা।
৬.পরিকল্পনা ও অধ্যবসায়: নতুন করে পরিকল্পনা করে এবং সঠিকভাবে অধ্যবসায়ের মাধ্যমে লক্ষ্যে পৌঁছানোর কৌশল।
৭. সমর্থন ব্যবস্থা ও মানসিক স্বাস্থ্য: শিক্ষার্থীদের জন্য সঠিক সহায়তা এবং মানসিক সুস্থতার গুরুত্ব।
৮. প্রযুক্তি ব্যবহার করে শেখা: শিক্ষায় প্রযুক্তির সঠিক ব্যবহার এবং অনলাইন রিসোর্সের মাধ্যমে শেখার উপায়।
৯. পরীক্ষা উদ্বেগ ও স্ট্রেস ম্যানেজমেন্ট: পরীক্ষার আগে ও পরে উদ্বেগ কমানোর কৌশল এবং মানসিক চাপ মোকাবেলার পদ্ধতি।
১০. সঠিক পড়াশোনা কৌশল এবং সময় ব্যবস্থাপনা: সময়কে সঠিকভাবে কাজে লাগিয়ে কীভাবে পড়াশোনা করা যায় এবং ফলাফল উন্নত করা যায়।
সর্বশেষ ধৈর্য, তাদের স্মরণ করিয়ে দিতে হবে আত্মহত্যা কোনো সমাধান নয়। দুনিয়ার এই ফলাফলের উপর তার ভবিষ্যৎ জীবন নির্ভর করবে না। তাঁর জীবনের সাথে জড়িয়ে আছে তার মা-বাবা, ভাই-বোনসহ অনেক প্রিয় মানুষের ভালোবাসা। তাকে ধৈর্য ধরে সামনের জীবনের জন্য প্রস্তুতি গ্রহণ করতে হবে।
এই ধরনের সেমিনার শিক্ষার্থীদের উৎসাহিত করবে, তাদের আত্মবিশ্বাস বাড়াবে এবং ব্যর্থতাকে সফলতার পথে একটি ধাপ হিসেবে দেখার মানসিকতা তৈরি করবে।
কোন প্রতিষ্ঠান যদি এমন আয়োজনের উদ্যোগ গ্রহণ করে তাহলে সবচেয়ে বেশি ভালো হবে। কেউ এগিয়ে আসতে চাইলে জানাবেন।
আপনাদের কারো গুরুত্বপূর্ণ মতামত থাকলে পার্সোনালি জানাবেন।