🧠 বাচ্চার ট্যানট্রাম মানে ছোট্ট একটা যুদ্ধ –
প্যারেন্টিংয়ের সবচেয়ে কঠিন পরীক্ষাগুলোর মধ্যে একটি হলো—বাচ্চার অতিরিক্ত বিরক্তি, কান্নাকাটি বা ট্যানট্রাম সামলানো।
একটা বিষয় ভেবে দেখেছেন কি?
বাচ্চার অতিরিক্ত কান্নাকাটি, জেদ, রাগ কিংবা বিরক্ত করার মুহূর্তগুলো অভিভাবকদের জন্য এমন এক মানসিক চাপ তৈরি করে, যা অনেক সময় তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধের চেয়েও ভয়ংকর মনে হয়!
সময়টি এমন, যখন আপনি নিজেই নিজের ভেতরে যুদ্ধ করছেন —
🔻 একদিকে ধৈর্য রাখতে চাইছেন,
🔻 আরেকদিকে আপনার ভেতরে প্রবল রাগ, ক্লান্তি, কষ্ট সবকিছু গর্জে উঠছে।
এই মুহূর্তে আপনি একেবারে অসহায়। কিন্তু এখানেই আপনার শান্ত থাকাটা শিশুর ভবিষ্যতের জন্য একটি বড় ইনভেস্টমেন্ট।
এটা অনেকটা এমন—
❝ আপনি জানেন যে ওষুধটা অতিরিক্ত তিতা, কিন্তু সেটা আপনাকে খেতেই হবে — না খেলে আরোগ্য হবে না। ❞
🌳 কারণটা খুব সহজ, কিন্তু গভীর:
সন্তান যখন কান্নাকাটি বা বিরক্ত করে, তখন আপনি কীভাবে তাকে সামলাচ্ছেন, আপনার মুখের অভিব্যক্তি কেমন, আপনার গলার স্বর কতটা শান্ত বা কর্কশ— সবকিছুই সে একটি ক্যামেরার মতো ধারণ করে করে।
আপনি যখন রাগের বশে চেঁচামেচি করেন, তখন অবচেতন মনে সে শিখে নেয় যে, কোনো কঠিন পরিস্থিতি এলে রাগ বা চিৎকারের মাধ্যমেই তার সমাধান করতে হয়।
আপনার আচরণ তার কাছে হয়ে ওঠে একটি মডেল। ফলে, বড় হয়ে সেও যখন এমন কোনো পরিস্থিতির মুখোমুখি হবে, তখন আপনার মতোই চিৎকার করে, মেজাজ দেখিয়ে তা সামলানোর চেষ্টা করবে। এটি একটি চক্রের মতো, যা আপনি অজান্তেই তৈরি করে ফেলছেন।
আরেকটু বুঝিয়ে বলি। ধরুন, আপনি আপনার সন্তানকে নিয়ে সুপারশপে গিয়েছেন। সে তার পছন্দের একটি খেলনা কিনতে চায়, কিন্তু আপনি কিনতে রাজি নন। সঙ্গে সঙ্গে সে মাটিতে শুয়ে পড়ল, হাত-পা ছুঁড়ে তীব্র কান্নাকাটি শুরু করে দিল। চারপাশের মানুষের কৌতূহলী দৃষ্টি আপনার ওপর এসে পড়ল। এই পরিস্থিতিতে আপনার ভেতরে একধরনের অসহায়তা, লজ্জা ও রাগ একইসাথে কাজ করবে।
এই মুহূর্তে আপনার মন চাইবে তাকে টেনে তুলে বকা দিতে, কষিয়ে একটা চড় বসাই দিতে কিংবা চিৎকার করে চুপ করতে বলতে। কিন্তু এখানেই আপনাকে আপনার ভেতরের সেই তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধ থামিয়ে দিতে হবে। এই তেতো ওষুধটি গিলে ফেলতে হবে। এটাই সত্যিকার গুড প্যারেন্টিং। এটাই আপনার সন্তানের ভবিষ্যতের জন্য একটি বড় ইনভেস্টমেন্ট।
করণীয় :
আজকের আলোচনায় ট্যানট্রাম কি, কেন ও করণীয় নিয়ে আলোচনা করবো না। এটা অনেক বড় ও বিস্তারিত ব্যখাসহ কোন পর্বে আলোচনা করবো ইন শা আল্লাহ। আজ শুধু এটাই বলতে চাই, জিনিসটা খুবই কঠিন তবে চেষ্টা অব্যাহত রাখতে হবে।
মনে রাখবেন, এই নীরব যুদ্ধটা আপনি লড়ছেন আপনার সন্তানের সুন্দর ভবিষ্যতের জন্য। আপনার আজকের ধৈর্য তার মধ্যে ধৈর্যের বীজ বপন করবে, আপনার আজকের শান্ত আচরণ তাকে শেখাবে কীভাবে নিজের আবেগ নিয়ন্ত্রণ করতে হয়। এটি কেবল একটি সাময়িক পরিস্থিতি নয়, বরং আপনার সন্তানের মানসিক বিকাশে একটি গুরুত্বপূর্ণ বিনিয়োগ।
🔻 ভালো লাগলে গ্রুপের নামসহ শেয়ার করতে ভুলবেন না।