অনেকের পরিবারেই এমন এক "অদৃশ্য দেয়াল" তৈরি হয়ে গেছে—যেখানে সন্তান কষ্ট পায়, অভিমান জমে, কিন্তু সে মুখ ফুটে বলতে পারে না। কারণ সে জানে, বললেই হয়তো মা-বাবা রেগে যাবেন, অপমানিত হবেন কিংবা বলবেন, “তুই আমার মুখের উপর কথা বলিস!”
কিন্তু আমরা যদি সত্যিই এই Generational curse ভাঙতে চাই—যে ভুল আচরণ প্রজন্ম থেকে প্রজন্মে চলে আসছে—তাহলে শুরুটা আমাদের থেকেই করতে হবে।
🔖কীভাবে?
সন্তানকে এমন নিরাপদ আবহ দিতে হবে, যাতে সে বলতে পারে: “মা, আপনি যেভাবে আমার কথা শেষ হওয়ার আগেই রেগে উঠলেন, আমার খুব ভয় লেগেছে।”
“আব্বু, আপনি আমার কথা না শুনেই বিচার করে দিলেন, আমি খুব কষ্ট পেয়েছি।” অর্থাৎ তাদের অনুভূতি প্রকাশের সুযোগ দিতে হবে।
🌿 এমন কথাগুলো শোনার সময় কী করবেন?
• সাথে সাথে প্রতিক্রিয়াশীল না হয়ে প্রতিক্রিয়াশীলতা দমন করার চেষ্টা করবেন।
• নিজেকে জবাবদিহির জায়গায় রাখুন: "হ্যাঁ, আমি মানুষ। আমি ভুল করতেই পারি।"
• সন্তানের অনুভূতিকে অগ্রাহ্য করবেন না, বরং বুঝতে চেষ্টা করুন: “তুমি এমন কেন মনে করেছ, বল তো?”
🏆ফলাফল কী হবে?
• সন্তান জানবে, তার কষ্টের মূল্য আছে।
• বাবা-মা হিসেবে আপনি হবেন তার সবচেয়ে নিরাপদ আশ্রয়।
• সম্পর্ক হবে ভালোবাসা ও বোঝাপড়া ভিত্তিক।
• এবং ধীরে ধীরে সেই পারিবারিক আচরণচক্র ভাঙবে, যেখানে শুধুমাত্র “ভয় দেখিয়ে” সন্তানকে নিয়ন্ত্রণ করা হতো।
🌟 শেষ কথা:
আমরা যদি চাই আমাদের সন্তানদের হৃদয় যেন আমাদের কাছে খোলা থাকে, তাহলে আমাদের আচরণেই সেই দরজার চাবি থাকতে হবে।
আসুন, প্রজন্ম বদলাতে নিজেদের থেকেই বদল শুরু করি। আসুন, সন্তানদের হৃদয় দেখার চোখ খুলি—কথা বলার সাহস দেই। এভাবেই গড়ে উঠবে একটি ভিন্ন, সুন্দর প্রজন্ম ইন শা আল্লাহ।
বি:দ্র: পোস্টটি পড়ে এমন ভাবার প্রয়োজন নেই, এই (কথা বলার) সুযোগ দেয়ার মাধ্যমে সন্তানকে মুখের উপর কথা বলার সুযোগ করে দেয়া হচ্ছে। বরং আজকে প্রজন্মের শুরুটা এমনই হয়, পরবর্তীতে তারা বাস্তবে আমাদের মুখের উপর কথা বলে। অর্থাৎ শিশু বয়সে যখন আমরা তাদের আবেগ-অনুভূতির মূল্যে দেই না, কথা বলার সুযোগ দেই না, ফলে তাদের সাথে যখন দূরত্ব সৃষ্টি হয় তখন তারা বিপথে চলে যায় এবং বাবা-মায়ের সাথে খারাপ আচরণ করে।
🌿 পরবর্তীতে আরেকটি বিস্তারিত পোস্টে জানাব, কেন কথা বলার স্বাধীনতা প্রয়োজন এবং কিভাবে কথার প্রতিক্রিয়া দেখাব।